সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন
রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২০ আগস্ট এই পয়েন্টে পানির উচ্চতা মাপা হয়েছিল ১৭ দশমিক ৮৫ মিটার যেখানে বিপৎসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার।
অর্থাৎ ওই দিন বিপৎসীমার মাত্র ০ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার নিচে ছিল পদ্মার পানি। তবে এর পরে আর পানি বাড়েনি। বর্তমানে পানি কমতে শুরু করেছে।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) ভোর ৬টায়, বিকেল ৩টায় ও সন্ধ্যা ৬টায় পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৭ মিটার। ২০ আগস্ট পদ্মার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে গেলেও পরদিন ২১ আগস্ট থেকেই পানি কমছে।
পরিসংখ্যান বলছে- পদ্মা নদীর রাজশাহী পয়েন্টে টানা এক সপ্তাহ ধরেই আর পানি বাড়েনি। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন আতঙ্ক। যদিও শহর রক্ষা বাঁধ থাকায় এলাকায় তেমন শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
জানতে চাইলে শুক্রবার রাতে রাজশাহী পাউবোর গেজ রিডার এনামুল হক বলেন, গত ২০ আগস্ট রাজশাহী পয়েন্টে সর্বোচ্চ পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ৮৫ মিটার। পরদিন ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় ৬টায় পানি কমে হয় ১৭ দশমিক ৮২ মিটার। এরপর আর পানি বাড়েনি, কমেছে।
তবে রাজশাহীতে পদ্মার পানি কমতে শুরু করায় নদীপাড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন আতঙ্ক। পানি কমলেও নদীর তীব্র স্রোত এসে আছড়ে পড়ছে পাড়ে। স্রোতের তোড়ে গোদাগাড়ীর নিমতলা, খারিজাগাতি ও মোল্লাপাড়া এলাকার পদ্মার পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। ভাঙন ঠেকাতে সেখানে সাড়ে চার হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এছাড়া রাজশাহীর পবা এবং বাঘা উপজেলার কিছু এলাকায়ও ভাঙন শুরু হয়েছে। তবে সেসব এলাকায় এখনও জিও ব্যাগ ফেলা হয়নি। আর রাজশাহী শহররক্ষা বাঁধ থাকায় মহানগর এলাকায় ভাঙনের আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পাউবো। যদিও এরই মধ্যে শ্রীরামপুর এলাকার টি-বাঁধ এবং কেশবপুর এলাকায় এরই মধ্যে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।
রাজশাহী পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রিফাত করিম বলেন, পদ্মার পানি এখন কমছে। তবে সামান্য বিরতি দিয়ে আবারও বাড়তে পারে। সাধারণত পানি কমতে শুরু করলে ভাঙন বাড়ে। এজন্য পাউবোর সতর্ক দৃষ্টি আছে। কোনো এলাকায় ভাঙন দেখা দিলে বা তীব্র হলে তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তাদের প্রস্তুতি আছে। এছাড়া রাজশাহীর গোদাগাড়ীর নিমতলা ও খারিজাগাতি এলাকাটি নতুন করে ভাঙছে। তাই সেখানে স্থায়ী বাঁধের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন- গেল কয়েক দিন পানি বাড়লেও বাঁধ ভেঙে বা বাঁধ উপচে বন্যার পানিতে শহর এলাকা প্লাবিত হওয়ার হওয়ার কোনো শঙ্কা ছিল না। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ অনেক উঁচু হওয়ায় জনবসতি সব সময়ই নিরাপদ থাকে। তবে পানি কমতে থাকলে নদী ভাঙন যেটা, তার পরিমাণ আবারও বাড়তে পারে। তবে তারা সেই ব্যাপারে সজাগ রয়েছেন। কোনো স্থাপনা ঝুঁকিতে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরইমধ্যে মহানগরীর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। টি-গ্রোয়েন এবং আই-বাঁধ ও কেশবপুর এলাকায়ও জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে বলে জানান, রাজশাহী পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী।